শরীয়তপুরের আংগারিয়া-বুড়িরহাট খাল খননের চার বছরের মধ্যেই পুনরায় ভরাট হয়ে যাওয়ার ঘটনা পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার ব্যর্থতারই প্রতিফলন। সরকারি উদ্যোগে খনন করা এই খালের মূল উদ্দেশ্য ছিল সেচের জন্য পানির প্রবাহ নিশ্চিত করা। কিন্তু স্থানীয় ব্যবসায়ীদের ময়লা-আবর্জনা ফেলা এবং খননকাজে অনিয়মের কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ খাল এখন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর ফলে দুই হাজার একর জমিতে বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এটি কৃষকদের জন্য বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যে অনিয়ম হয়েছে, তা স্পষ্ট। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কীর্তিনাশা নদীর সঙ্গে খালের সংযোগস্থলে পর্যাপ্ত মাটি সরায়নি। এতে খালে নদীর পানি প্রবেশ করতে পারছে না। একই সঙ্গে বাজারের ব্যবসায়ীদের ময়লা-আবর্জনা ফেলার প্রবণতাও খালের দ্রুত ভরাটের অন্যতম কারণ। এসব সমস্যার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ভবিষ্যতে এমন উন্নয়ন প্রকল্পগুলোও অর্থ ও শ্রমের অপচয়ে পরিণত হবে।
এ সমস্যার সমাধান সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরি।
প্রথমত, খালের সঠিক পুনঃখনন জরুরি। কেবল খালের ভেতরের মাটি সরালেই হবে না, নদীর সংযোগস্থলের প্রতিবন্ধকতা দূর করতে হবে। এটি নিশ্চিত করার জন্য বিশেষজ্ঞ পরামর্শ নিয়ে যথাযথ প্রকৌশল পদ্ধতিতে খননকাজ পরিচালনা করতে হবে। পর্যাপ্ত তদারকির মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হবে যে কাজের গুণগত মান বজায় রয়েছে।
দ্বিতীয়ত, স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বিকল্প ময়লা ফেলার জায়গা নির্ধারণ করতে হবে। পৌর কর্তৃপক্ষের উচিত খালের পাড়ে ময়লা ফেলা নিষিদ্ধ ঘোষণা করা এবং কঠোর নজরদারি চালানো। বাজারে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি চালু করে ব্যবসায়ীদের জন্য একটি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা যেতে পারে।
তৃতীয়ত, স্থানীয় কৃষকদের সেচের জন্য বিকল্প পানির উৎস নিশ্চিত করতে হবে। এতে কৃষি উৎপাদন ব্যাহত হবে না।
এ ছাড়া ভবিষ্যতে এ ধরনের প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে যথাযথ পরিকল্পনা ও কঠোর তদারকি নিশ্চিত করা জরুরি। ঠিকাদারদের দায়িত্বশীলতার মধ্যে আনতে সরকারি সংস্থাগুলোর আরও সক্রিয় হওয়া প্রয়োজন। একই সঙ্গে স্থানীয় জনগণের সচেতনতা বাড়াতে প্রচারাভিযান চালানো যেতে পারে, যাতে তাঁরা নিজেদের স্বার্থেই খাল পরিষ্কার রাখার গুরুত্ব বোঝেন। এ বিষয়ে প্রশাসনের পাশাপাশি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদেরও উদ্যোগী হতে হবে। নিয়মিত পরিষ্কার ও নজরদারির জন্য একটি মনিটরিং কমিটি গঠন করা যেতে পারে, যেখানে স্থানীয় প্রশাসন, কৃষক প্রতিনিধি এবং ব্যবসায়ীরা সমন্বিতভাবে কাজ করবেন।
আংগারিয়া-বুড়িরহাট খালের সমস্যা এক দিনে সৃষ্টি হয়নি। তাই সমাধানও ধাপে ধাপে করতে হবে। তবে সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণ করা গেলে এটি আবারও কৃষকের সেচের প্রধান উৎস হয়ে উঠতে পারে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).