সংঘাত-সংঘর্ষ আমাদের নির্বাচনী রাজনীতির ‘অপরিহার্য অংশ’ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ বিএনপি অংশ না নেওয়ায় নির্বাচনটি তেমন প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়নি।
জনমনে ধারণা ছিল, যেহেতু বিএনপি এই নির্বাচনে আসেনি, সেহেতু হানাহানি কম হবে। বাস্তবতা হলো নির্বাচন শেষ হওয়ার ছয় দিন পরও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘাতের ঘটনা ঘটছে। কোনো কোনো এলাকায় সংখ্যালঘু পরিবারকে আক্রমণের লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।
গত শনিবার নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এজেন্ট শাহেদুজ্জামান ওরফে পলাশ দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন। ভোটকেন্দ্রে জাল ভোট দেওয়ার প্রতিবাদ করায় নৌকা প্রতীকের সমর্থকেরা তাঁকে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
৯ জানুয়ারি ঝিনাইদহ-২ আসনে নৌকা প্রার্থীর সমর্থক বরুণ কুমার ঘোষকে হত্যা করেন স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা। কুষ্টিয়া-৪ আসনে হামলার শঙ্কায় বাড়িছাড়া হয়েছিল কয়েকটি সংখ্যালঘু পরিবার। পরে অবশ্য পুলিশ তাদের নিজ বাড়িতে ফিরিয়ে এনেছে। বাগেরহাট, পিরোজপুর জেলায়ও সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
প্রথম আলোর খবর থেকে জানা যায়, ভোট গ্রহণের ছয় দিন পরও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কর্মীকে কুপিয়ে জখম করা ও মারধর করার ঘটনা ঘটছে। তাঁরা একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা করছেন। পঞ্চগড়ে যুবলীগের এক কর্মীকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও ছড়িয়ে পড়েছে। নির্বাচনের প্রচার শুরুর পর এ পর্যন্ত সহিংসতায় ৯ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন কয়েক শ।
যেকোনো নাগরিক কোনো প্রার্থীকে সমর্থন করতে পারেন, আবার না-ও করতে পারেন। সেটি একান্ত তাঁর গণতান্ত্রিক অধিকার। এই অধিকার চর্চা করতে গিয়ে তাঁকে হামলার শিকার হতে হবে? যাঁরা নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন বলে দাবি করেন, তাঁরা যদি অগণতান্ত্রিক কাজ করেন, তখনই এ রকম সংঘাতময় পরিস্থিতির তৈরি হয়।
নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে পরাজিত পক্ষ নির্বাচন কমিশনে নালিশ জানাতে পারে, কোনো প্রার্থীর সমর্থকদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কা থাকলে তিনি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে প্রতিকার চাইতে পারেন। সেসব না করে দুই পক্ষ সংঘাতে-সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া আইনের শাসনের পরিপন্থী। এর মাধ্যমে তারা আইন নিজের হাতে তুলে নিয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উসকানিও আছে বলে ধারণা করা যায়। তাঁরা যদি নির্বাচনের রায় মেনে নেন, তাহলে কর্মী-সমর্থকদের বেআইনি কার্যক্রম থেকে বিরত রাখছেন না কেন?
উল্লেখ্য, এবারের নির্বাচন ঘিরে যেসব সংঘাতের ঘটনা ঘটেছে, তার প্রায় পুরোটাই হয়েছে আওয়ামী লীগের মনোনীত ও স্বতন্ত্র প্রার্থীদের মধ্যে। দলের ভেতরে ন্যূনতম শৃঙ্খলা থাকলে কিংবা নেতৃত্বের প্রতি আস্থা থাকলে তাঁরা এই কাজ করতে পারেন না।
এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নিষ্ক্রিয়তাও গ্রহণযোগ্য নয়। যেখানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ঘটনা না ঘটলেও বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ‘গায়েবি মামলা’ দায়ের করে তঁাদের হয়রানি করতে পারেন, সেখানে নির্বাচনী সংঘাতে লিপ্ত ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মীদের প্রতি এই নমনীয়তার কোনো ব্যাখ্যা নেই।
আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নির্বাচনের পর শান্তি বজায় রাখার যে আহ্বান জানানো হয়েছিল, তা-ও তাঁরা অগ্রাহ্য করেছেন। তাঁরা মুখে প্রতিদ্বন্দ্বিতার নামে ফ্রি স্টাইল চলবে না বলে হুঁশিয়ার করলেও বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া দুর্ভাগ্যজনক।
যেই প্রার্থী বা প্রতীকের সমর্থক হোন না কেন, যঁারা এসব সহিংসতার ঘটনা ঘটাচ্ছেন, অবিলম্বে তঁাদের আইনের আওতায় আনা হোক।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).