নেতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদন,চাকরিপ্রত্যাশীদের আতঙ্ক দূর করুন

সরকারি চাকরির নিয়োগের চূড়ান্ত ধাপে এবং প্রশিক্ষণরত অবস্থায় নেতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের কারণে চাকরিপ্রত্যাশীর বাদ পড়ার ঘটনা প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। সাম্প্রতিককালে ৪৩তম বিসিএসের প্রশাসন ক্যাডারসহ অন্যান্য ক্যাডারে প্রশিক্ষণরত কয়েকজন শিক্ষানবিশ কর্মকর্তাকে সুনির্দিষ্ট কারণ দর্শানো ছাড়াই চাকরিচ্যুত করার ঘটনা চাকরিপ্রত্যাশীদের মধ্যে হতাশা ও গভীর আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। জুডিশিয়াল সিভিল সার্ভিসসহ অন্যান্য নিয়োগেও সুপারিশপ্রাপ্তদের অনেকে বাদ পড়েছেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক ৪৩তম বিসিএসের তিন সহকারী কমিশনারকে অপসারণের প্রজ্ঞাপনে ‘বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস নিয়োগ বিধিমালা, ১৯৮১’-এর বিধি ৬(২)(এ) উল্লেখ করা হয়েছে। এই বিধিতে বলা আছে, শিক্ষানবিশ মেয়াদে কোনো কর্মকর্তাকে ‘চাকরিতে বহাল থাকার অযোগ্য’ মনে হলে পিএসসির পরামর্শ ছাড়াই নিয়োগ বাতিল করা যায়। কিন্তু মূল সমস্যা হলো, এই ‘অযোগ্যতার’ কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়নি।

একজন প্রার্থী ৪১তম বিসিএসে রেলওয়ে ক্যাডারে প্রথম এবং ৪৩তম বিসিএসে প্রশাসন ক্যাডারে ৩০তম হয়েছিলেন, ১১ মাস জেলা প্রশাসনে সফলভাবে কাজও করেছেন, তাঁকে বিনা কারণে অপসারণ করা হয়েছে। এটি শুধু তাঁর ওপর ব্যক্তিগত অবিচার নয়, রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ মেধাসম্পদকে অপমান করার শামিল। জনপ্রশাসন বিশেষজ্ঞ এবং সাবেক অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ ফিরোজ মিয়ার মতে, প্রশিক্ষণরত অবস্থায় কারণ দর্শানো নোটিশ ছাড়া কাউকে চাকরিচ্যুতি করা বিদ্যমান সংবিধানের ১৩৫ অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক এবং এটা অপ্রত্যাশিত।

নিয়োগপ্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে বড় সংকট হলো পুলিশ বা নিরাপত্তা সংস্থার নেতিবাচক প্রতিবেদন (ভেরিফিকেশন)। তীব্র প্রতিযোগিতায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও বহু মেধাবী প্রার্থীর চূড়ান্ত নিয়োগ আটকে যাচ্ছে এই জটিলতার কারণে। অন্তর্বর্তী সরকার ২৮তম থেকে ৪২তম বিসিএসে বাদ পড়া ২৫৯ জন প্রার্থীকে নিয়োগ দিয়ে যে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল, সেই প্রক্রিয়া এখনো পুরোপুরি জটিলতামুক্ত হয়নি। এরপরও দীর্ঘসূত্রতা এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের কারণে নিয়োগ আটকে থাকার অভিযোগ রয়েছে। 

১৭তম জুডিশিয়াল সিভিল সার্ভিসের নিয়োগ পরীক্ষায় সুপারিশপ্রাপ্তদের মধ্যে ১৪ জনকে বাদ দিয়ে বৃহস্পতিবার গেজেট প্রকাশ করা হয়েছে। এর আগে পেট্রোবাংলা ও এর অধীন কোম্পানিগুলোর সমন্বিত নিয়োগপ্রক্রিয়ার শেষ ধাপে ১৫ প্রার্থী চূড়ান্ত তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন। প্রার্থীদের ভাষ্য, লিখিত, মৌখিক, ভেরিফিকেশন, মেডিকেলসহ সব ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করা সত্ত্বেও চূড়ান্ত তালিকা থেকে তাঁদের বাদ দেওয়া হয়েছে।

সবচেয়ে বড় উদ্বেগের বিষয় হলো প্রার্থীরা প্রায়ই অভিযোগ করেন যে পিএসসির সুপারিশপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের রাজনৈতিক পরিচয়ের বিবেচনায় ভেরিফিকেশনে বাদ দেওয়া হচ্ছে, যা সংবিধানের ২৮ ও ২৯ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী।

এ ধরনের অস্বচ্ছ এবং স্বেচ্ছাচারী অপসারণ ও নিয়োগ আটকে থাকার ঘটনা একদিকে যেমন রাষ্ট্রের প্রতি সাধারণ জনগণের এবং বিশেষ করে চাকরিপ্রত্যাশীদের আস্থাকে দুর্বল করে, তেমনি প্রশাসনের অভ্যন্তরেও একধরনের ভীতি ও অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ আমলে নেতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ ও রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ চরমভাবে সমালোচিত ছিল। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পর চাকরিতে নিয়োগে এই নিপীড়নমূলক সংস্কৃতি থেকে বের হয়ে আসার জোরালো দাবি ছিল। নিয়োগের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনার বিষয়টি অবসানের অঙ্গীকারও প্রকাশ পেয়েছিল অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে। কিন্তু দিন শেষে আমরা বাস্তবতার ভিন্নতা দেখতে পাচ্ছি। এখনো নেতিবাচক পুলিশ প্রতিবেদনের কারণে চূড়ান্ত ধাপে এসে চাকরিপ্রত্যাশীদের অনেকে বাদ পড়ে যাচ্ছেন। আমরা মনে করি, নিয়োগ বাতিলের প্রতিটি ক্ষেত্রে, তা শিক্ষানবিশ পর্বেই হোক বা অন্য কোনো পর্যায়ে, সুনির্দিষ্ট ও যুক্তিযুক্ত প্রকাশ করতে হবে। ন্যায্য ও যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া অসাংবিধানিকভাবে ও নাগরিক অধিকার ক্ষুণ্ন করে কাউকে সরকারি চাকরি থেকে বঞ্চিত করার সুযোগ নেই।

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

View All resone For signin

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

Recent News

This petiton does not yet have any updates

Rubel Khan

Started This Abedon.

29 November 2025   3 K

0 have signed. Let’s get to 15,000 !

0%
Treands

At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!

Sign This

By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.

Must see setitions

লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বৃদ্ধি কী কারণে ?

লাভজনক চট্টগ্রাম বন্দরের মাশুল বৃদ্ধি কী কারণে ?

দেশের আমদানি–রপ্তানি বাণিজ্যের ৯২ শতাংশই হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। এই বন্দর দিয়ে যেসব পণ্য আমদানি হয়, তার মধ্যে রয়েছে খাদ্যশস্য,... Sign This
বিপর্যস্ত শ্রীপুর সিসা কারখানাটি কেন বন্ধ করা হবে না

বিপর্যস্ত শ্রীপুর সিসা কারখানাটি কেন বন্ধ করা হবে...

বৈধ–অবৈধ কারখানার কারণে গ্রামবাংলার পরিবেশ এখন বিপর্যস্ত। বৈধ কারখানাগুলো পরিবেশ আইন মানছে কি না, তা নিয়মিত তদারকি করা হয় না।... Sign This
Loading