একটা সময় বরিশাল শহরকে বলা হতো প্রাচ্যের ভেনিস। নদী–খাল–বিল ও জলাধারের কারণে ইতালির ভেনিস শহরের সঙ্গে ছিল এমন তুলনা। যদিও নগরায়ণের দিক থেকে সেই ভেনিসের সঙ্গে আমাদের শহরগুলোর কোনো অর্থেই তুলনা চলে না। ভেনিস এখনো নদী–খালের শহর থেকে গেলেও বরিশাল থেকে এসবের অনেক কিছুই হারিয়ে গেছে এবং হারিয়ে যেতেও বসেছে। সম্প্রতি শহরটির শতবর্ষী দুটি জলাধার রক্ষার আন্দোলনে নেমেছে সেখানকার পরিবেশসচেতন সুধীসমাজ ও সংগঠন।
অপরিকল্পিত নগরায়ণের কারণে একটি শহরের প্রাণ–পরিবেশ কতটা সংকুচিত হয়ে আসতে পারে, তার একটি বড় উদাহরণ হতে পারে বরিশাল। স্থানীয় পরিবেশ সংগঠকেরা বলে থাকেন, নগরটিতে একসময় ২৪টি খাল ছিল।
এর অধিকাংশই ভরাট করা হয়েছে। একসময় ছোট–বড় মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার দিঘি ও পুকুর ছিল, যার অধিকাংশই হারিয়ে গেছে। এর ফলে বরিশালের প্রকৃতিগত যে চিরায়ত রূপ, সেটিই হারিয়ে যেতে বসেছে। এমন পরিস্থিতিতে নগরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের হাসপাতাল রোডে পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের আওতাধীন মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের প্রাঙ্গণে থাকা ৩৩ শতাংশ পুকুর ও ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাশীপুরের সীতারামের দিঘিতে ভরাটকাজ চলছে। এর মধ্যে একটি পুকুরের অর্ধেকের বেশি ভরাট করে ফেলা হয়েছে।
পুকুর দুটি শত বছর ধরে নগরটিতে আছে। এমন পুরোনো পুকুরের সঙ্গে স্থানীয় জনসমাজের স্মৃতি ও সংস্কৃতি যুক্ত থাকে। ফলে এমন পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেন সংক্ষুব্ধ বরিশালবাসী ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।
সেখানে এলাকাবাসীসহ পরিবেশসচেতন অনেক মানুষ অংশ নেন। এ কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, বরিশাল নগরের সব কটি খাল-পুকুর ও দিঘি একের পর এক ভরাটের পর স্থাপনা নির্মাণ করে নগরের সামগ্রিক পরিবেশকে বিপন্ন করা হচ্ছে। এসব জলাশয় ভরাট করার কাজ নির্বিঘ্নে চললেও প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর নির্বিকার। তাঁরা এ অবস্থা থেকে উত্তরণ চান।
পরিবেশ আইন, ২০০০ অনুযায়ী, কোনো পুকুর বা অন্য জলাশয় ভরাট দণ্ডনীয় অপরাধ। ব্যক্তিগত পুকুর বা দিঘি ভরাট করতে হলেও পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন প্রয়োজন। এরপরও কী করে শতবর্ষী দুটি পুকুর ভরাট করা হয়? ফলে সমাবেশ থেকে প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের প্রতি অভিযোগের যে আঙুল তোলা হয়েছে, তা কোনোভাবেই অযৌক্তিক নয়।
এলাকাবাসী ও পরিবেশসচেতন মানুষদের তৎপরতার পর প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও পরিবেশ অধিদপ্তর এখন নানা পদক্ষেপের কথা বলছে। কিন্তু যখন পুকুর দুটি ভরাট করে ফেলা হচ্ছিল, তখন তারা কোথায় ছিল? পুকুর দুটি রক্ষা ও পুনরুদ্ধার করা হোক।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).