শিক্ষানগরী হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ জেলা। শিক্ষার প্রায় সব স্তরেরই প্রতিষ্ঠান রয়েছে এই নগরীতে। ফলে ময়মনসিংহ বিভাগের আশপাশে জেলার অধিকাংশ শিক্ষার্থীর বসবাস এই শহরে। এটি বাংলাদেশের অষ্টম বিভাগীয় শহর। এ ছাড়াও এটি দেশের কনিষ্ঠতম সিটি করপোরেশন। তবে এই শহর এখন ছিনতাইকারীদের শহরে পরিণত হয়েছে। মানুষের জন্য হয়ে পড়েছে অনিরাপদ। গত বৃহস্পতিবার ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে নিহত হন এক যুবক।
মোহনগঞ্জ থেকে ঢাকা যাওয়ার পথে এক যাত্রী ময়মনসিংহ স্টেশনে নেমে ৩নং প্ল্যাটফর্মের পরিত্যক্ত বগির পেছনে প্রস্রাব করতে গেলে ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাতে খুন হোন ওই যুবক। এই যে নির্মমভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা হলো, এই দায় কার? স্টেশনে নিরাপত্তায় পুলিশ ছিল না? থাকলে তারা কোথায় ছিলেন? কী করছিলেন? আর ছিনতাইকারীও এত সাহস কোথায় পেল? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন কেউ?
এই মানুষটা, মানুষটার পরিবারের জন্য আপনার খারাপ লাগছে না? আচ্ছা খারাপ না-লাগলে, ভয় তো পাওয়ার কথা। কাল যে আপনি, আমি তাদের শিকার হব না, এটার নিশ্চয়তা কী?
তবুও আপনি, আমি, আমরা চুপ করে থাকি। আমরা তত দিন চুপ থাকি যত দিন না আমাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। কথা বলি না অথবা কথা বলতে ভয় পাই। ময়মনসিংহ আমার শহর, কিন্তু দুঃখের সঙ্গে বলতে হচ্ছে বর্তমান সময়ে নিরাপত্তার দিক থেকে সবচেয়ে অনিরাপদ বলা চলে এই শহরকে। ছিনতাইকারীদের হাতে হত্যার ঘটনা নতুন নয়। কিছুদিন আগে সাদেক আলী ও হাবিবুর রহমান নামে দুই অটোরিকশা চালক নিহত হন ছিনতাইকারীদের হাতে। ২০১৮ সালে কলেজছাত্র ইব্রাহীম ও বিকাশের এজেন্ট হরি নামে দু’জন নিহত হয়েছিলেন ছিনতাইকারীদের হাতে।
ময়মনসিংহ শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থান—ব্রিজ এলাকা, চরপাড়া, মাসকান্দা, ত্রিশাল বাসস্ট্যান্ড, স্টেশন, জুবলি ঘাট, কাচারি ঘাট, আকুয়া, সানকিপাড়া, জয়নুল আবেদিন পার্ক, প্রতিদিন শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে আগত শত শত মানুষ চলাফেরা করে এসব স্থানে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো প্রতিদিনই ঘটছে এই জায়গাগুলোতে চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা। শহরের স্থানীয় বাসিন্দারাও রেহাই পান না এদের হাত থেকে।
নগরীর অনেক স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরাও শিকার হচ্ছে ছিনতাইয়ের। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় আসা সংবাদের ভিত্তিতে শহরের মহাসড়কসহ অন্তত অর্ধশত স্পটে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে নিয়মিত, যার সংবাদ প্রকাশ হচ্ছে ময়মনসিংহের বিভিন্ন স্থানীয় পত্রিকাসহ জাতীয় গণমাধ্যমে কিন্তু হচ্ছে না এর কোনো প্রতিকার বরং বেড়ে চলছে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য।
একটি শহরের বাহ্যিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়নের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ সে শহরের মানুষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। যে শহরে আপনি নিরাপদভাবে চলাফেরা করতে পারবেন না, সেই শহরের বাহ্যিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন দিয়ে কী হবে? অবশ্য অবকাঠামোগত উন্নয়নই বা কতটা হয়েছে তা নিয়েও আছে প্রশ্ন।
কে, কারা বা কোন দলের লোক দায়িত্বে আছে এই সব প্রশ্নের উত্তর আমি খোঁজতে চাই না, এটা আলোচনার বিষয়ও না। আমি শুধু বলতে চাই যারা এই শহরের দায়িত্বে আছেন এই শহরের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছেন, শহরের মানুষের নিরাপত্তা কীভাবে নিশ্চিত করা যায় তা নিয়ে একটু ভাবুন, চিন্তা করুন।
কারা এসব কাজের সঙ্গে জড়িত তা খোঁজে বের করুন। অনেকেরই অভিযোগ, পুলিশও ছিনতাইকারীর থেকে ভাগ-বাঁটোয়ারা পান। জানি না এটা কতটা সত্যি। তবে যদি সত্যিই এ রকম হয় তাহলে এটা কতটা ভয়ংকর চিন্তা করেন। তাই বলব এসব বিষয় খতিয়ে দেখেন। যথাযথ মনিটরিংয়ের মাধ্যমে ছিনতাইকারী সদস্যদের দ্রুত আটক করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। এ সমস্যার সমাধানে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য অনুরোধ করছি।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 500,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).