নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের মতোই হাল স্যালাইনের। হাসপাতালে রোগীদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় স্যালাইনের জোগান দিতে পারছে না কর্তৃপক্ষ—১০ গুণ পর্যন্ত বেশি দামে তা কিনতে হচ্ছে। আগস্ট-সেপ্টেম্বরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি ছিল। তখনো আমরা ঢাকাসহ সারা দেশে শিরায় দেওয়া স্যালাইনের সংকটের কথা শুনেছিলাম। এখন ডেঙ্গুর প্রকোপ কিছুটা কম।
শীতের শুরুতে নিউমোনিয়া বেড়েছে। এখন আবারও সংকট। রাজশাহী থেকে প্রথম আলোর সাংবাদিক জানাচ্ছেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও ওষুধের দোকানদারেরা বলেছেন, তাঁরা যে ডিলারদের কাছ থেকে স্যালাইন সংগ্রহ করতেন, তাঁরা জোগান দিতে পারছেন না। ভুক্তভোগী পরিবারগুলো ৮৬ টাকার স্যালাইন কিনেছে ৮৫০ টাকা করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামী আহাম্মদ স্যালাইন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কাছে ৪০ হাজার স্যালাইন চেয়েছিলেন, পাননি।
আর ইডিসিএল বলেছে, তারা স্যালাইন উৎপাদন করে না। উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বাজার থেকে সংগ্রহ করে হাসপাতালে সরবরাহ করে। ভারত থেকে আমদানি করা হচ্ছে। কারিগরি ত্রুটির কারণে স্যালাইন এসে পৌঁছায়নি এখনো। ব্যস, হয়ে গেল।
এই চাপান-উতোরের মধ্যে মানুষকে ঠিকই ভুগতে হচ্ছে। সবকিছু বাজারে দুর্লভ, দাম চড়া এবং কেন এই হাল, তার কোনো উপযুক্ত জবাব নেই। ডেঙ্গুর সময় স্যালাইনের সংকট নিয়ে ইংরেজি পত্রিকা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড লিখেছিল, বেসরকারি ছয়টি প্রতিষ্ঠান স্যালাইন উৎপাদন করে। যখন চাহিদা বেশি, তখন শীর্ষে থাকা প্রতিষ্ঠানটি তাদের উৎপাদন ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনে।
জাতীয় প্রতিযোগিতা কমিশন পরে স্যালাইন উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়ে বসে। তাদের কেউ কেউ বলেছে, স্যালাইন উৎপাদন লাভজনক নয়। তাদের ব্যাংকঋণ চাই। সে সময় প্রতিযোগিতা কমিশন কঠোর হওয়ার কথাও বলেছিল। কিন্তু আবারও প্রমাণিত হলো অসারের তর্জন-গর্জন সার। একটা সময় বাংলাদেশের জাতীয় জনস্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান (আইপিএইচ) নিজেই শিরায় দেওয়া স্যালাইন উৎপাদন করত।
প্রতিদিন তাদের প্ল্যান্টে ১২ হাজার ব্যাগ স্যালাইন উৎপাদন হতো। নিয়মকানুন ঠিকমতো মানা হচ্ছে না এই অজুহাতে সরকার বেশ কয়েক বছর আগে স্যালাইন উৎপাদন বন্ধ করে দেয়।
সরকার চাইলে আইপিএইচে বিনিয়োগ করে প্ল্যান্টের ত্রুটিগুলো সারিয়ে নিতে পারত। সেই পথে তারা হাঁটেনি। এরপর শোনা গেল ইডিসিএলের প্ল্যান্টে স্যালাইন উৎপাদিত হবে। এর মধ্যে ডেঙ্গু আর ডায়রিয়া-নিউমোনিয়ার কয়েক মৌসুম এল-গেল। কিন্তু ইডিসিএলের স্যালাইনের আর দেখা পাওয়া গেল না।
আইপিএইচের প্ল্যান্ট কেন বন্ধ করে দেওয়া হলো কিংবা ইডিসিএল কেন উৎপাদনে যেতে পারল না, তার যথাযথ উত্তর পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। সময়মতো আমদানিটা করলেও মানুষের কষ্ট কমত। আর্থিক কষ্টে থাকা পরিবারের শিশুরা এমনিতেই অপুষ্টিতে, আর রোগে ভোগে বেশি। সরকারি হাসপাতালেও তারাই বেশি যায়। অন্তত সেখানে গিয়ে যেন স্যালাইনটা পায়, তা নিশ্চিত করুন।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 500,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).