প্রকৃতি সংরক্ষণ, প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা এবং মানুষকে প্রকৃতির সান্নিধ্যে নিয়ে আসার লক্ষ্য নিয়ে মূলত ইকোপার্ক গড়ে তোলা হয়। ফলে ইকোপার্ককে ঘিরে গড়ে ওঠে একটি পর্যটনকেন্দ্রও। কিন্তু দেশের ইকোপার্কগুলোর কোনো কোনোটির অবস্থা এত করুণ যে সেগুলোকে পর্যটনকেন্দ্র বলাটা দুষ্কর হয়ে যায়। এমন একটি ইকোপার্ক হলো বরগুনার তালতলীতে অবস্থিত টেংরাগিরি ইকোপার্ক। এ পর্যটনকেন্দ্র থেকে পর্যটকেরা দিন দিন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। বিষয়টি হতাশাজনক।
বঙ্গোপসাগরের তীরে অবস্থিত টেংরাগিরি ইকোপার্ক একসময় দক্ষিণাঞ্চলের অন্যতম সম্ভাবনাময় পর্যটনকেন্দ্র ছিল। ২০১০-১১ ও ২০১১-১২ অর্থবছরে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের ‘ইকো ট্যুরিজমের সুযোগ বৃদ্ধি’ কর্মসূচির আওতায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য ও উপকূলীয় বনসম্পদে ভরপুর পার্কটি গড়ে তোলা হয়। যার পেছনে ব্যয় হয় ২ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। ১৩ হাজার একরের বেশি আয়তনের এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলে পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে গড়ে তোলা হয় ১৬টি কাঠের সেতু, বনভোজনের জন্য স্থান, পাকা রাস্তা, শৌচাগার, বিশ্রামাগার। বন্য প্রাণীর নিরাপদ আবাস তৈরি করে সেখানে অবমুক্ত করা হয়েছিল বাঘ, হরিণ, কুমির, বানরসহ বিভিন্ন বন্য প্রাণী।
শুরুতে কয়েক বছর ভালোভাবেই চলেছিল ইকোপার্কটি। পরবর্তী সময়ে রক্ষণাবেক্ষণ ও যত্নের অভাবে অবকাঠামোগুলো নষ্ট হয়ে যেতে শুরু করে। কাঠের সেতু ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে, রাস্তার ইট উঠে গিয়ে চলাচলে ভোগান্তি সৃষ্টি করছে। শৌচাগারগুলো পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে, প্রাণী সংরক্ষণের জন্য নির্মিত গ্রিল ভেঙে গেছে, দেয়ালের পলেস্তারা খসে পড়েছে। দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য সাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ সড়কটিও এখন বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ২০২০ সালে সোনাকাটা খালের ওপর একটি সেতু নির্মাণের কাজ শুরু হলেও নকশারর জটিলতায় তা এখনো সম্পূর্ণ হয়নি। এসব কারণে বর্তমানে পার্কে মাসে মাত্র ৩০০-৪০০ দর্শনার্থী আসেন, যেখানে একসময় তা ছিল ৮০০-৯০০ জন।
রেঞ্জ কর্মকর্তারা দীর্ঘদিন ধরে ইকোপার্কটি সংস্কারের দাবি জানিয়ে আসছেন। নতুন প্রকল্প গ্রহণ করে তা দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে, নয়তো টেংরাগিরির সম্ভাবনা ধ্বংস হয়ে যাবে। ইকোপার্ককে ঘিরে অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছিল, সেটিও এখন স্থিমিত হয়ে গেছে। ফলে ইকোপার্কটি অবহেলায় নষ্ট হলে শুধু রাষ্ট্রীয় সম্পদের অপচয় নয়, স্থানীয় অর্থনীতির জন্যও বড় ক্ষতি।
সরকারি ও স্থানীয় উদ্যোগে টেংরাগিরি ইকোপার্ককে ঢেলে সাজানো এখন সময়ের দাবি। রক্ষণাবেক্ষণ, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং টেকসই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ইকোপার্কটি পর্যটকবান্ধব করে গড়ে তোলা হোক।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 750,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).