কক্সবাজারের পেকুয়া ও চট্টগ্রামের বাঁশখালীর মধ্যে সংযোগকারী বাঁশের সাঁকোটি ভেঙে পড়ার দুই মাস পার হলেও এখনো মেরামত করা হয়নি। ফলে দুই উপজেলার প্রায় ১৫ হাজার মানুষ, বিশেষ করে পাঁচ শতাধিক শিক্ষার্থী প্রতিদিন চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও দৈনন্দিন চলাফেরায় এই ভোগান্তি দীর্ঘমেয়াদে সামাজিক ও অর্থনৈতিকভাবে বড় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
সাঁকো ভেঙে যাওয়ার পর স্থানীয় লোকজন এখন ডিঙি নৌকার মাধ্যমে পারাপার হচ্ছেন; কিন্তু খালের দুই পাড়ে কোনো সিঁড়ি না থাকায় প্রতিদিন শিশু, বৃদ্ধ ও নারী-পুরুষের জন্য নৌকায় ওঠা-নামা ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে একাধিক দুর্ঘটনার ঘটনাও ঘটেছে।
গ্রামীণ অবকাঠামো এখনো কতটা নড়বড়ে, এ ঘটনাই তার প্রমাণ। একটি বাঁশের সাঁকো ভেঙে পড়ার পর দুই মাসেও কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া নিছক অবহেলা নয়, এটি নাগরিক অধিকারকে অবজ্ঞা করার শামিল। এই পরিস্থিতি কোনোভাবেই মেনে নেওয়ার মতো নয়। যে সাঁকোটি স্থানীয় একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত অর্থায়নে নির্মিত হয়েছিল, সেটি ছিল মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা। সরকারি উদ্যোগে একটি স্থায়ী সেতু তৈরি হলে এমন দুর্ভোগ আর দেখা দিত না।
প্রশ্ন হলো সরকারি তহবিল কোথায়? জনগণের করের টাকায় উন্নয়নের নামে কত প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে, কত সেতু ও সড়ক উদ্বোধনের ছবি তোলা হচ্ছে, অথচ একটি ছোট সাঁকোর নির্মাণ বা জরুরি বিকল্প ব্যবস্থার মতো তৎপরতা নেই। স্থানীয় মানুষের জীবনের ঝুঁকি কি এতটাই মূল্যহীন?
সবচেয়ে বড় ক্ষতির শিকার হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় পার হতে গিয়ে তাদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে। একদিকে দেশের শিক্ষাব্যবস্থা উন্নয়নের দাবি করা হচ্ছে, অন্যদিকে বাস্তবে শিক্ষার্থীরা স্কুলে পৌঁছাতেই হিমশিম খাচ্ছে। একটি রাষ্ট্র যদি তার ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে স্কুলে যাওয়ার নিরাপদ পথও নিশ্চিত করতে না পারে, তবে উন্নয়নের বড় বড় বুলি কেবল ভণ্ডামি ছাড়া কিছু নয়। উপজেলা প্রশাসন শুধু ‘দেখে ব্যবস্থা নেবে’ বলে দায়িত্ব এড়িয়ে যাচ্ছে। এ ধরনের অবহেলা শুধু অব্যবস্থাপনা নয়, এটি কার্যত জনগণের অধিকার নিয়ে তামাশা।
সরকারি কর্তৃপক্ষের এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া জরুরি। স্বল্প মেয়াদে বাঁশ বা কাঠের নতুন সাঁকো তৈরি করা যেতে পারে; কিন্তু দীর্ঘ মেয়াদে ওই এলাকায় একটি স্থায়ী কংক্রিটের সেতু নির্মাণ ছাড়া বিকল্প নেই। কারণ, এটি শুধু পেকুয়া ও বাঁশখালীর মধ্যে সংযোগ নয়, এটি স্থানীয় উন্নয়ন, শিক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত।
বড় শহরে উড়ালসড়ক নির্মাণ কিংবা সড়ক প্রশস্ত করাই কেবল উন্নয়ন নয়। প্রকৃত উন্নয়ন হলো প্রত্যন্ত গ্রামের শিশু যাতে নিরাপদে স্কুলে যেতে পারে, তা নিশ্চিত করা। আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই—দ্রুত জরুরি ভিত্তিতে অস্থায়ী সাঁকো মেরামত ও স্থায়ী সেতু নির্মাণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হোক। মানুষের চলাচলের অধিকার নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। দুই মাসের অবহেলা যেন আর দীর্ঘ না হয়।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).