ভোলার চরফ্যাশনে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির (টিআর, কাবিখা, কাবিটা) প্রকল্পগুলোতে অনিয়ম যেন নিয়মে পরিণত হয়েছে। কাগজে-কলমে শতভাগ কাজ শেষ দেখানো হলেও বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অনেক প্রকল্পে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ কাজ হয়েছে, কোথাও আবার একেবারেই হয়নি। অথচ পুরো টাকাই উত্তোলন করা হয়েছে।
চরমাদ্রাজ ইউনিয়নের একটি সড়কে পাঁচ লাখ টাকার মাটি ফেলার প্রকল্প হাতে নেওয়া হলেও সেখানে এক ঝুড়িও মাটি ফেলা হয়নি। আহাম্মদ ইউনিয়নের একাধিক প্রকল্পে বরাদ্দ থাকলেও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ড সদস্যরা জানেনই না, তাঁদের নাম ব্যবহার করে প্রকল্প দেখানো হয়েছে। যেসব রাস্তায় কাজ হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে, সেখানে সামান্য মাটি ছিটিয়ে রাখা হয়েছে। কয়েক দিনের বৃষ্টিতেই পুরোনো রাস্তা বেরিয়ে এসেছে। এ যেন প্রকল্প নয়, জনগণের টাকায় লুটপাটের এক বৈধ আয়োজন।
সবচেয়ে উদ্বেগজনক বিষয় হলো, প্রকল্প কমিটির সভাপতির নাম ব্যবহার করা হয়েছে তাঁদের অগোচরে। যাঁরা নাকি কাজ বাস্তবায়ন করেছেন, তাঁদের অনেকেই বলছেন, তাঁরা প্রকল্পের সঙ্গে যুক্তই নন। তাহলে কারা টাকা তুললেন? কারা কাগজে স্বাক্ষর করলেন? স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের যোগসাজশ ছাড়া কি এমনটা সম্ভব?
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বক্তব্য আরও বিস্ময়কর। তিনি দাবি করেছেন, ‘জুনে বিল তোলার একটা বিষয় ছিল, বিল তুলে রাখা হয়েছে, ধীরে ধীরে কাজ করানো হবে।’ প্রশ্ন হলো, কাজ না করে কেন বিল তোলা হলো? সরকারি অর্থ কি ব্যক্তিগত আমানত, যা তুলে রেখে পরে কাজে লাগানো যাবে? জনগণের করের টাকা এমনভাবে যথেচ্ছ ব্যবহারের সুযোগ প্রশাসন কীভাবে দেয়? এতে প্রমাণিত হয়, স্থানীয় প্রশাসন থেকে জনপ্রতিনিধি—সবাই কমবেশি অনিয়মের সঙ্গে জড়িত।
এমন পরিস্থিতি কেবল ভোলায় নয়, দেশের অনেক জায়গাতেই দৃশ্যমান। টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পের মূল লক্ষ্য ছিল দরিদ্র মানুষের কর্মসংস্থান ও গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন। কিন্তু টিআর, কাবিখা, কাবিটা প্রকল্পগুলো বছরের পর বছর দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনার কারণে গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়নের বদলে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। প্রকল্পের কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নেই, বাস্তবায়নে জবাবদিহি নেই আর তদারকিতে দায়সারা মনোভাব। ফলে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়ছে আর উন্নয়ন শুধু কাগজে-কলমেই সীমাবদ্ধ থাকছে।
সরকারি এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে। জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের বাইরে স্থানীয় মানুষের অংশগ্রহণ বাড়ানো জরুরি। অভিযোগগুলো স্বাধীনভাবে তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন। উন্নয়নকে টেকসই ও স্বচ্ছ না করলে সেটা কেবল দুর্নীতির আরেক নাম হয়ে থাকবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).