শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখতে বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিন

সরকার যখন নতুন শিক্ষাক্রমের মাধ্যমে শিক্ষা ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার কথা ভাবছে, তখন দেশে ৫ থেকে ২৪ বছর বয়সী শিক্ষার্থীদের ৪১ শতাংশ পড়াশোনার বাইরে থাকার তথ্য খুবই উদ্বেগজনক। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী, উল্লিখিত বয়সের মোট জনসংখ্যা ৬ কোটি ৩৭ লাখ, যাদের ৫৯ দশমিক ২৮ শতাংশ শিক্ষায় আছে।

গণসাক্ষরতা অভিযান আয়োজিত ‘বিদ্যালয়বহির্ভূত শিশু-কিশোরদের শিক্ষার চ্যালেঞ্জ: সমাধান কোন পথে’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় জানানো হয়, প্রাথমিকে যত শিক্ষার্থী ভর্তি হয়, তাদের মধ্যে প্রায় ১৪ শতাংশ প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করার আগেই ঝরে পড়ে। মাধ্যমিকে গিয়ে এই হার বেড়ে হয় ৩৬ শতাংশ। এরপর আছে কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়। এর অর্থ হলো প্রাথমিক ও মাধ্যমিক মিলে ৫০ শতাংশ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্তর অতিক্রম করতে পারছে না। তাহলে সরকার শতভাগ বা তার কাছাকাছি শিশুকে বিদ্যালয়ে ভর্তি করার যে কৃতিত্ব দাবি করে, সেটা অন্তসারশূন্য হয়ে যায়।

সরকারের নীতিনির্ধারকেরা শিক্ষার হার বাড়ছে বলে ফলাও প্রচার করেন। কিন্তু প্রাথমিক, মাধ্যমিক কিংবা উচ্চস্তরে যে লাখ লাখ শিশু ঝরে পড়ছে, তাদের শিক্ষায় ফিরিয়ে আনার জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা চালু করা হয়েছিল, যার কার্যক্রম এখন অনেকটাই স্তিমিত হয়ে পড়েছে। বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার প্রধান কারণ দারিদ্র্য। সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলোকে দারিদ্র্যের চক্র থেকে বের করে আনতে না পারলে বিদ্যালয়ে ভর্তির হার যতই বাড়ানো হোক না কেন, ঝরে পড়া ঠেকানো যাবে না।

বিনা মূল্যে পাঠ্যবই দেওয়া সরকারের ভালো উদ্যোগ। কিন্তু কেবল পাঠ্যবই বিনা মূল্যে বিতরণ করেই শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে ধরে রাখা যাবে না। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের আর্থিক ও সামাজিক অবস্থারও উত্তরণ ঘটাতে হবে। গরিব পরিবারের অভিভাবকেরা নিজেদের আয়ে সংসার চালাতে পারেন না বলে সন্তানদেরও কাজে লাগান। সে ক্ষেত্রে সরকারকে সহায়তার হাত বাড়াতে হবে। সেটা হতে পারে খাদ্য আকারে কিংবা আর্থিকভাবে। পরীক্ষামূলকভাবে বিদ্যালয়ে দুপুরের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। সেই কর্মসূচি ব্যাপক ভিত্তিতে চালু করা প্রয়োজন। যেসব পরিবার সন্তানকে কাজে পাঠায়, তাদের কিছুটা আর্থিক সহায়তা কিংবা শিক্ষাঋণ দেওয়া যেতে পারে।

এর পাশাপাশি কর্মজীবী শিক্ষার্থীদের জন্য উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা চালু করতে হবে, যাতে তারা কাজ করেও পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে। গণসাক্ষরতা অভিযানের পক্ষ থেকে দেশের কোন এলাকায় কত স্কুল দরকার, সে জন্য ‘স্কুল ম্যাপিং’ করার কথা বলা হয়েছে। কোনো এলাকায় কাছাকাছি বিদ্যালয় না থাকলে বিকল্প ব্যবস্থা করতে হবে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বাইরে থাকা ও ঝরে পড়া বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীকে কোনো না কোনো প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দেওয়ার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিতে হবে।

সর্বোপরি সব শিশুকে বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতে এবং ঝরে পড়া রহিত করতে হলে শিক্ষায় বরাদ্দ বাড়াতে হবে। দুর্ভাগ্য যে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশেই শিক্ষায় বরাদ্দের হার সবচেয়ে কম। আবার বরাদ্দ বাড়ালেই তো হবে না, সেটা ঠিকমতো ব্যয় হচ্ছে কি না, তা তদারক করতে স্থানীয় জনগণকেও সম্পৃক্ত করতে হবে। আমলানির্ভর তদারকি অনেকটা ‘কাজির গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই’–এর মতো।

সরকার যে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ করার কথা বলছে, সেটা বিপুলসংখ্যক শিশু-কিশোরকে শিক্ষাঙ্গনের বাইরে রেখে সম্ভব নয়।

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

View All resone For signin

Reasons for signing.

See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).

Recent News

This petiton does not yet have any updates

Hasan

Started This Abedon.

13 May 2024   4.8 K

0 have signed. Let’s get to 100,000 !

0%
Treands

At 100,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!

Sign This

By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.

Must see setitions

রাঙামাটিতে শিক্ষকসংকট,সমাধানে প্রয়োজন জরুরি উদ্যোগ

রাঙামাটিতে শিক্ষকসংকট,সমাধানে প্রয়োজন জরুরি উদ্যোগ

ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত কারণে পার্বত্য তিন জেলা এমনিতেই রাষ্ট্রীয় অনেক সুবিধা থেকে পিছিয়ে পড়া। এর মধ্যে খবরে এসেছে, রাঙামাটির সরকারি... Sign This
সাত কলেজের সেশনজট,সিদ্ধান্তহীনতার মূল্য শিক্ষার্থীরা কেন দেবেন

সাত কলেজের সেশনজট,সিদ্ধান্তহীনতার মূল্য শিক্ষার্থীরা কেন দেবেন

২০২৪–২৫ শিক্ষাবর্ষে ঢাকার বড় সাতটি সরকারি কলেজের জন্য নতুনভাবে প্রস্তাবিত ‘ঢাকা সেন্ট্রাল ইউনিভার্সিটির’ অধীন ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কিন্তু এর... Sign This
চিলমারীতে বিদ্যালয়ের পথরোধ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই সমাধান

চিলমারীতে বিদ্যালয়ের পথরোধ প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপই সমাধান

কুড়িগ্রামের চিলমারীর একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আজ পথহীন। শিক্ষকেরা গাছতলায় বসে ক্লাস নেন, শিক্ষার্থীরা ধুলা, ময়লা আর যানবাহনের শব্দের মধ্যে... Sign This
মাধ্যমিকের বই এবারও কেন শিক্ষার্থীরা সময়মতো বই পাবে না ?

মাধ্যমিকের বই এবারও কেন শিক্ষার্থীরা সময়মতো বই পাবে...

অতীতের ভুল থেকে আমাদের নীতিনির্ধারক, আমলাতন্ত্র ও প্রতিষ্ঠানগুলো যে কোনো শিক্ষা নেয় না—এটিই ইতিহাসের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। বই ছাপাতে দেরি... Sign This
থুতু থেকে ভয়াবহ সংঘাত,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের অবসান হতে হবে

থুতু থেকে ভয়াবহ সংঘাত,শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নৈরাজ্যের অবসান হতে হবে

অসতর্কতাবশত এক শিক্ষার্থীর ফেলা থুতু অন্য এক শিক্ষার্থীর শরীরে লাগাকে কেন্দ্র করে দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের রাতভর সংঘাতে জড়িয়ে পড়ার ঘটনাকে... Sign This
মাধ্যমিক শিক্ষার প্রতি এত অবহেলা কেন?

মাধ্যমিক শিক্ষার প্রতি এত অবহেলা কেন?

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার ভিত্তি হচ্ছে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা। সেখানে শিক্ষার মান, ব্যবস্থাপনা, শিক্ষকদের মূল্যায়ন, বরাদ্দসহ বিভিন্ন জায়গায় নানা অবহেলা বিদ্যমান।... Sign This
পাঠকশূন্য আধুনিক পাঠাগার,জামালপুরে সৃজনশীল উদ্যোগ নিন

পাঠকশূন্য আধুনিক পাঠাগার,জামালপুরে সৃজনশীল উদ্যোগ নিন

সমাজে জ্ঞানচর্চা ও মানুষকে পাঠমুখী করতে পাঠাগারচর্চার ঐতিহ্যের কথা আমাদের কারও অজানা নয়। সময়ের পরিক্রমা, সমাজের নানা পটপরিবর্তন ও পৃষ্ঠপোষকতার... Sign This
শরীয়তপুরের স্কুল নদীভাঙনে আর কত দিন পাঠদান বন্ধ থাকবে?

শরীয়তপুরের স্কুল নদীভাঙনে আর কত দিন পাঠদান বন্ধ...

শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলার একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় গত ১৪ সেপ্টেম্বর পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্কুলটিতে পড়ত চরাঞ্চলের ৪০০ পরিবারের... Sign This
লালমোহন পাঠাগার সংস্কার করে চালু করুন

লালমোহন পাঠাগার সংস্কার করে চালু করুন

দীর্ঘদিন ব্যবস্থাপনা ও সংস্কারের অভাবে ৩৩ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়ে আছে ভোলার লালমোহন উপজেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরিটি ।ভোলার লালমোহন... Sign This
পরীক্ষার ফলের মাধ্যমেই মেধার মূল্যায়ন না হোক

পরীক্ষার ফলের মাধ্যমেই মেধার মূল্যায়ন না হোক

আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের একটা বড় সমস্যা, কোনো শিক্ষার্থী পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেলে তাকে মেধাবী ছাত্র হিসেবে ধরে নেওয়া হয়। স্বাভাবিকভাবে... Sign This
Loading