আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের রায়কে কেন্দ্র করে কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ অনলাইনে কর্মসূচি দেয়। এই কর্মসূচি ঘিরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ও যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা অব্যাহত আছে। জননিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ও শঙ্কা রয়েই গেছে। পুলিশ আশঙ্কা করছে, আগামীকাল (১৭ নভেম্বর) পর্যন্ত এ ধরনের চোরাগোপ্তা নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটতে পারে। ফলে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা নিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দিক থেকে যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, আদৌ সেটা যথেষ্ট কি না, তা নিয়ে বড় প্রশ্ন ও সংশয় থেকে যাচ্ছে।
খবর জানাচ্ছে, বৃহস্পতিবার মধ্যরাত থেকে শুক্রবার রাত ১০টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা, মানিকগঞ্জ, বরগুনা ও গাজীপুরে চারটি বাসে ও আশুলিয়ায় একটি পিকআপ ভ্যানে আগুন দেওয়া হয়। ঢাকায় পাঁচ জায়গায় ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। মোহাম্মদপুরে জেনেভা ক্যাম্প থেকে ৩৫টি ককটেল উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া বাসে আগুন দিয়ে পালানোর সময় স্থানীয় মানুষের ধাওয়ায় নদীতে পড়ে এক তরুণের মৃত্যু হয়।
১৩ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনাসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায়ের তারিখ ঘোষণা দেন। আওয়ামী লীগ সেদিন অনলাইনে লকডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করে এবং ৭ নভেম্বর থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিচ্ছেন্ন কিছু নাশকতার ঘটনা শুরু হয়। শুক্রবার রাত পর্যন্ত ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ২৯টি যানবাহনে আগুন দেওয়া হয়। এর মধ্যে ময়মনসিংহের ফুলপুরে একটি বাসে আগুন দিলে ঘুমিয়ে থাকা এক ব্যক্তি নিহত হন, আহত হন আরও একজন। মানিকগঞ্জে গভীর রাতে বাসে আগুন দিলে একজন গুরুতরভাবে দগ্ধ হন। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণ ও ঝটিকা মিছিলও হয়েছে। ব্যাংক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নাশকতার ঘটনাও ঘটেছে।
সামগ্রিকভভাবে নাগরিকদের মধ্যে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। দেখা যাচ্ছে, গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনায় নিরাপত্তা বাড়ানো, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল ও নাশকতাকারীদের ধরতে বিশেষ অভিযানের পরও নাশকতা থামানো যাচ্ছে না। ঢাকায় নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করায় নাশকতার ঘটনা কিছুটা কমলেও ঢাকার আশপাশের জেলাগুলোতে এ ধরনের ঘটনা বেশি ঘটছে। ফলে যেসব জেলায় নাশকতার ঘটনা বেশি ঘটছে, সেসব জায়গায় বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নিতে হবে।
কার্যক্রম নিষিদ্ধ কোনো রাজনৈতিক দলের আইনগতভাবে কর্মসূচি পালনের কোনো সুযোগ নেই। নাশকতা ঠেকাতে সরকারকে অবশ্যই কঠোর অবস্থান নিতে হবে। সেই দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর। গত এক সপ্তাহে প্রায় ১৭৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে নাশকতা ঠেকানোর নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতা–কর্মীদের যেভাবে মোড়ে মোড়ে অবস্থান নিতে দেখা গেছে, তাতে নাগরিকদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আরও বেড়েছে।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে কর্মসূচির নামে সহিংসতা, বাসে আগুন দেওয়ার মতো ঘটনা এবং এসব নাশকতা প্রতিরোধের নামে পাল্টা কর্মসূচি আকছার দেখা যায়। রাজনৈতিক দলগুলো নাগরিকদের জিম্মি করে কর্মসূচি পালন করতে অভ্যস্ত। এতে শেষ পর্যন্ত নাগরিকেরাই দুর্ভোগ ও ভোগান্তিতে পড়েন, নাশকতার আগুনে মৃত্যু হয়, সর্বস্ব হারান। এই ধারার সংঘাতময় রাজনীতির অবসান চান নাগরিকেরা। রাজনৈতিক দলগুলোকে মনে রাখা প্রয়োজন যে নাশকতা ঠেকানো ও নাশকতাকারীদের গ্রেপ্তারের দায়িত্ব পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।
আইসিটিতে শেখ হাসিনার রায় ঘিরে নাগরিকদের মধ্যে যে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে, সরকার ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে তা প্রশমন করতে হবে। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 5,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).