ভরা মৌসুমে টানা ১৫ দিন মাঠে নেই কক্সবাজারের লবণচাষিরা। উৎপাদন খরচের প্রায় অর্ধেক দামে লবণ বিক্রি করে লোকসান দিতে চান না কেউ। পরিস্থিতি বিচার করলে স্পষ্ট বোঝা যায়, লবণশিল্প ও চাষিরা দাঁড়িয়ে আছেন এক গভীর সংকটের মুখে।
খবরে এসেছে, লবণ চাষের প্রয়োজনীয় জমির ইজারামূল্য অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে ৭০-৮০ হাজার টাকায় পৌঁছেছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। অন্যদিকে গত মৌসুমে উৎপাদিত লবণের দাম বাজারে না ওঠায় চাষিরা লোকসানে পড়েছেন। উৎপাদন খরচ যেখানে প্রতি মণে প্রায় ৪০০ টাকা, সেখানে বাজারদর নেমে এসেছে ২৩০ টাকায়। ফলে অনেক চাষিই নতুন মৌসুমে মাঠে নামতে ভয় পাচ্ছেন। এ পরিস্থিতি শুধু চাষির জীবিকাকেই হুমকিতে ফেলে না, দেশের লবণশিল্প ও খাদ্যনিরাপত্তাকেও ঝুঁকির মধ্যে ঠেলে দেয়।
দেশে বার্ষিক লবণের চাহিদা ২৭ লাখ টনের কাছাকাছি। অথচ মাঠে এখনো আগের মৌসুমের সাড়ে পাঁচ লাখ টন লবণ মজুত রয়ে গেছে। নতুন মৌসুমে উৎপাদন বিলম্বিত হলে ডিসেম্বর নয়, জানুয়ারিতেই দেশে লবণের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। এমন আশঙ্কা করছেন বিসিকের কর্মকর্তারাও। পরিস্থিতি এমন হলে সরকারকে বাধ্য হয়ে লবণ আমদানির দিকে ঝুঁকতে হবে। ইতিমধ্যে দেড় লাখ টন আমদানির আবেদন জমা পড়েছে, যদিও প্রান্তিক চাষিদের স্বার্থ বিবেচনায় সরকার আবেদনগুলো স্থগিত রেখেছে। কিন্তু দীর্ঘসূত্রতা বজায় থাকলে সংকট আরও ঘনীভূত হতে পারে।
সরকারের এখন জরুরি ভিত্তিতে কয়েকটি পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। প্রথমত, লবণের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে বাজার ব্যবস্থাপনায় কঠোর মনিটরিং চালু করতে হবে এবং প্রান্তিক চাষিদের জন্য ন্যূনতম মূল্য ঘোষণার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। দ্বিতীয়ত, লবণ চাষের জমির ইজারামূল্য নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় প্রশাসনকে কার্যকর ভূমিকা নিতে হবে, যাতে অযৌক্তিক ইজারা বৃদ্ধির কারণে চাষ বাধাগ্রস্ত না হয়। তৃতীয়ত, লবণ সংরক্ষণ, গবেষণা ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নিশ্চিত করতে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প গ্রহণ জরুরি। প্রয়োজনে কৃষিঋণ ও ভর্তুকিও দেওয়া যেতে পারে।
লবণ আমদানি বন্ধ, উৎপাদিত লবণের ন্যায্যমূল্যসহ ১৩ দফা দাবি জানিয়েছেন কক্সবাজারের চাষিরা। তাঁদের দাবিগুলো দীর্ঘদিনের বঞ্চনার প্রতিফলন। এসব দাবি বাস্তবায়ন হলে চাষে স্থিতিশীলতা ফিরবে। লবণশিল্পে সাত লাখ মানুষের জীবিকা জড়িয়ে আছে। তাঁদের ভবিষ্যৎ রক্ষায় দ্রুত, সমন্বিত ও কার্যকর সরকারি পদক্ষেপ এখন সময়ের দাবি।
আমরা আশা করি, লবণ চাষের সংকট সমাধানে জরুরি ভিত্তিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে সরকার। নয়তো যেমন ঝুঁকির মধ্যে পড়বে দেশের লবণশিল্প, তেমনই সেই সংকট নিরসনে লবণ আমদানি করা হলে তা হবে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকতের দেশের জন্য চূড়ান্ত লজ্জার।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).