শরীয়তপুর-জাজিরা-নাওডোবা (পদ্মা সেতু অ্যাপ্রোচ) সড়ক নির্মাণকাজ চলছে, যার মধ্য দিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের একটি স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। তবে প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে যে দুর্নীতির সংস্কৃতি চালু আছে, তার ব্যত্যয় দেখা যাচ্ছে না এই অ্যাপ্রোচ সড়কটির বেলায়ও। অভিযোগ উঠেছে জেলা প্রশাসনের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার একদল অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী একটি চক্রকে সহায়তা করছে। এসব দুর্নীতির অভিযোগকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই।
প্রতিবেদন জানাচ্ছে, ২০২১ সালে জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দেওয়ার পরপরই জাজিরার ঢালীকান্দি ও মতিসাগর এলাকায় একটি চক্র দ্রুত অবৈধ ঘরবাড়ি নির্মাণ শুরু করে। উদ্দেশ্য ছিল একটাই, অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ আদায়। সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) ভিডিও প্রমাণে দেখা যাচ্ছে, যেখানে একসময় ফাঁকা কৃষিজমি ছিল, সেখানে এখন কাঠের পাটাতনের ওপর বসানো তালাবদ্ধ টিনের ঘর দাঁড়িয়ে আছে। এই ঘরগুলোতে কোনো মালামাল নেই, কেউ বসবাস করে না।
প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০২৩ সালে যৌথ তদন্তে অবৈধ স্থাপনাগুলোকে ‘জনস্বার্থবিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। অথচ সম্প্রতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মাসুদুল আলমের দপ্তর থেকে সেই জনস্বার্থবিরোধী স্থাপনাগুলোকেই নতুন করে ক্ষতিপূরণের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে অবৈধভাবে নির্মিত স্থাপনার জন্য ৮ থেকে ১০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। এ ঘটনা কেবল সরকারি অর্থের অপচয়ের পথই উন্মুক্ত করবে না, একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের অগ্রযাত্রাকেও প্রশ্নবিদ্ধ করবে।
প্রশ্ন হচ্ছে, সেসব স্থাপনার জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের (রাজস্ব) দপ্তর কেন গণপূর্ত বিভাগ ও বন বিভাগকে নতুন করে মূল্য নির্ধারণের তালিকা পাঠাল? এই ‘পুনঃ যাচাই-বাছাইয়ের’ সিদ্ধান্তটি কিসের ভিত্তিতে নেওয়া হলো? জমি হস্তান্তর না হওয়ার কারণেই জাজিরার ঢালীকান্দি ও মতিসাগর এলাকায় দুই কিলোমিটার এলাকার কাজ বন্ধ। ভূমি অধিগ্রহণের জটিলতা জিইয়ে রেখে একটি চক্রকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে না তো? জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেছেন, প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কিন্তু যেখানে ভিডিও, সরেজমিনে তদন্ত এবং সওজের সুস্পষ্ট আপত্তি রয়েছে, সেখানে ‘প্রমাণ আসার’ অপেক্ষা করার অর্থ কী?
শরীয়তপুরের এ ঘটনা প্রমাণ করে, উন্নয়ন প্রকল্প সফল করতে হলে কেবল অর্থ বরাদ্দই যথেষ্ট নয়, স্থানীয় প্রশাসনের প্রতিটি স্তরে নৈতিকতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা জরুরি। আমরা আশা করব, ক্ষতিপূরণ দেওয়ার উদ্যোগটি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করে একটি স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। ভিডিও প্রমাণ ও সওজের তালিকা উপেক্ষা করে অবৈধ স্থাপনাকে যারা তালিকায় যুক্ত করেছে, সেই চক্র ও অধিগ্রহণ শাখার সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চিহ্নিত করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).