মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এক ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে, যা সেখানকার পরিবেশ এবং কৃষিকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলে দিয়েছে। প্রশাসনের ইজারা দেওয়া এলাকার বাইরে গিয়ে স্থানীয় প্রভাবশালী বিএনপি নেতাদের একটি চক্র যে হারে বালু লুট করছে, তাতে নদীতীরবর্তী তিন ফসলি উর্বর জমিগুলোতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সেখানে যথেষ্ট ভূমিকা রাখতে পারছে না।
প্রতিবেদন জানাচ্ছে, জেলা বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন সরকারের নামে পরিচালিত একটি বৈধ বালুমহালের নাম ব্যবহার করে এই অবৈধ কার্যক্রম চলছে। কাগজে-কলমে বৈধ ইজারা থাকলেও, চক্রটি প্রশাসনের নির্দেশনা অমান্য করে ইজারা মৌজা থেকে দেড় হাজার ফুট গভীরে না গিয়ে, পাশের চরমসুরা মৌজার কৃষিজমির সীমানা ঘেঁষে দিন-রাত খননযন্ত্র (ড্রেজার) চালাচ্ছে। এই চক্রের বেপরোয়া কর্মকাণ্ড যেভাবে হোক থামাতেই হবে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার জমিগুলো মুন্সিগঞ্জের সবচেয়ে উর্বর কৃষিজমি। বালুখেকোদের কারণে ইতিমধ্যে অনেক কৃষিজমি বিলীন হয়ে গেছে। একজন কৃষক ক্ষোভের সঙ্গে বলেছেন, ‘আগে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকতেও হাত-পাও ধরলে তারা নদীর মধ্যে গিয়ে বালু কাটত। এখন বিএনপির নেতারা কোনো কিছু মানে না। দিন-রাইত বালু কাটতাছে। কিছু কইতে গেলে উল্টা মাইরের ভয় দেখায়।’
ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুমে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞাকে পর্যন্ত এই চক্র মানেনি। প্রতিদিন শতাধিক বাল্কহেড বোঝাই করে বালু বিক্রি হচ্ছে, যা থেকে চক্রটি দৈনিক ৫০ লাখ টাকার ওপরে আয় করছে। অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধে স্থানীয় বাসিন্দারা স্মারকলিপি দিয়েছেন, গ্রামবাসী ধাওয়া দিয়েছেন, এমনকি উপজেলা প্রশাসন ১৮টি অভিযান চালিয়েছে, মামলা করেছে এবং জরিমানা করেছে। কিন্তু কোনো কিছুতেই এই বালু লুট বন্ধ করা যাচ্ছে না। এই ব্যর্থতার কারণ অনুসন্ধানে গেলে বেরিয়ে আসে আরও গুরুতর তথ্য। বালু তোলার শ্রমিকেরাই বলছেন, কোস্টগার্ড বা প্রশাসন কখন অভিযানে বের হবে, সেই খবর বালুখেকোরা আগেই পেয়ে যায়। অভিযান শুরুর আগে ড্রেজারগুলো নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। অভিযান শেষে আবার বালু তোলার কাজ শুরু হয়ে যায়।
কোস্টগার্ডের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে এ গুরুতর অভিযোগ কোনোভাবেই গুরুত্বহীন করে দেখার সুযোগ নেই। কারণ, বালু তোলার শ্রমিকদের থেকেই এমন বক্তব্য পাওয়া গেছে। তা ছাড়া ১৮টি অভিযান চালানোর পরও অবৈধভাবে বালু তোলা বন্ধ না হওয়ার বিষয়টি প্রশ্ন তৈরি করে। এখন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রমাণ করতে হবে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন বন্ধে তারা কতটা আন্তরিক। শুধু শ্রমিকদের ধরলেই হবে না, অভিযুক্ত বড় ব্যক্তিদেরও ধরতে হবে। বাল্কহেড ও বালু পরিবহনের ট্রাকও আটক করতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 15,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).