বর্ষা মৌসুম শেষ হতেই লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলায় শুরু হয়েছে ফসলি জমি ও জনস্বাস্থ্যের ওপর এক নতুন আগ্রাসন। সেখানে নজিরবিহীন ঔদ্ধত্যের সঙ্গে চলছে অনুমোদিত ২টি ভাটার বিপরীতে ৫১টি অবৈধ ইটভাটা। এর মধ্য দিয়ে স্থানীয় প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের চরম ব্যর্থতা এবং পরিবেশ বিনষ্টকারী প্রভাবশালীদের কাছে তাদের নতজানু অবস্থান স্পষ্টভাবে প্রকাশ পাচ্ছে। যে কারণে আদালতের নির্দেশও সেখানে কোনো কাজে আসছে না। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন (নিয়ন্ত্রণ) আইন অনুযায়ী, কৃষিজমি এবং লোকালয়ের কাছাকাছি ইটভাটা স্থাপন সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। কিন্তু রামগতির এই ৫১টি ভাটাই চলছে কৃষিজমি গিলে খেয়ে। চর আফজল গ্রামের কৃষক নুরুল আলমের কথায় উঠে আসে সেই নির্মম সত্য, ‘গ্রামে একসময় ছিল ধান ও সবজির জমি। এখন সেখানে সারি সারি ইটভাটা। জমির মাটি কেটে নেওয়ায় ফসল উৎপাদন কমে যাচ্ছে।’ জমির উপরিভাগের উর্বর মাটি (টপ সয়েল) কেটে ইট তৈরি করতে গিয়ে ভবিষ্যতের খাদ্যনিরাপত্তার মেরুদণ্ডও ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া এই ভাটাগুলো সাত মাস ধরে (নভেম্বর থেকে মে) যে কালো ধোঁয়া ও দূষণ ছড়ায়, তা স্থানীয় লোকজনের মধ্যে ভয়াবহ স্বাস্থ্য–সংকট তৈরি হয়েছে।
আইন লঙ্ঘনের জন্য যেখানে সর্বোচ্চ দুই বছরের কারাদণ্ড ও বড় অঙ্কের জরিমানার বিধান রয়েছে, সেখানে প্রশাসনের ভূমিকা অত্যন্ত দুঃখজনক। স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, এসব অবৈধ ভাটা বন্ধে প্রতিবছর ‘লোকদেখানো অভিযান’ চালানো হয়, যেখানে শুধু সাময়িক জরিমানা দিয়ে মালিকেরা পার পেয়ে যান। জরিমানা দিয়ে প্রশাসন চলে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ভাটার কার্যক্রম আবার পুরোদমে শুরু হয়।
যখন হাইকোর্ট স্পষ্ট করে রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৪৮টি অবৈধ ভাটা বন্ধের নির্দেশ দেন এবং প্রশাসন তা বাস্তবায়ন করতে পারে না, বরং হাইকোর্টের আদেশের পরও নতুন ভাটা তৈরি হয়, তখন পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসনের সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন ওঠে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জানিয়েছেন, হাইকোর্টের নির্দেশে কয়েকটি ভাটা ভেঙে দিয়েছিল প্রশাসন। পরে মালিকেরা আবার মেরামত করে চালু করেছেন। ইউএনওর বক্তব্য থেকে এটিই প্রতীয়মান হয়, এভাবে অভিযান চালিয়ে কোনো সুফল মিলছে না। এ ক্ষেত্রে পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের ক্ষোভও যথার্থ। তিনি বলেছেন, মালিকদের প্রভাবের কাছে প্রশাসনের নতি স্বীকারের কারণেই নাগের ডগায় এসব অবৈধ ভাটা বছরের পর বছর ধরে গড়ে উঠছে এবং টিকে থাকছে।
স্থানীয় প্রশাসন কঠোর না হওয়া ছাড়া ইটভাটা বন্ধ করা যাবে না। একবার বন্ধ করে আবার চালু করার মতো সুযোগ রাখা যাবে না। যথাযথ আইন প্রয়োগ করে মূল হোতাকে শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি করতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 10,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).