সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি হচ্ছে সমাজে পিছিয়ে পড়া ও সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রার মান উন্নতির জন্য রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ। এ কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে বয়স্ক ভাতা, বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত মহিলা ভাতা, মুক্তিযোদ্ধা সম্মানী, প্রতিবন্ধী ভাতা, শিক্ষা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি, মাতৃত্বকালীন ভাতাসহ বিভিন্ন সহায়তা। দুঃখজনক হচ্ছে, দেশের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত ও পিছিয়ে পড়া ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষেরা সরকারের কল্যাণমূলক কর্মসূচিতে বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন। এটি কোনোভাবে কাম্য নয়।
খবর জানাচ্ছে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) সাম্প্রতিক একটি গবেষণা প্রতিবেদনে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের প্রতি বাংলাদেশের সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি নিয়ে বৈষম্যের চিত্রটি প্রকাশ পেয়েছে। পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপাত্ত বিশ্লেষণ করে টিআইবি দেখিয়েছে, কর্মসূচিতে অন্তর্ভুক্তির যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ১৯ দশমিক ৭ শতাংশ ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষ সুবিধা পান, যা জাতীয় পর্যায়ের অন্তর্ভুক্তির হারের (২৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ) তুলনায় অনেক কম।
টিআইবির গবেষণা দেখায়, বয়স্ক ভাতা, বিধবা ভাতা, প্রতিবন্ধী ভাতা, মা ও শিশু সহায়তা ভাতা এবং ভালনারেবল উইমেন বেনিফিট (ভিডব্লিউবি)—কোনোটিই ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর মানুষের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে পৌঁছাচ্ছে না। যোগ্যদের মধ্যে বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্ত ভাতা সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ১২ শতাংশ। যোগ্যদের মধ্যে ভিডব্লিউবি সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ১২ দশমিক ৪ শতাংশ। যোগ্যদের মধ্যে বয়স্ক ভাতা সুবিধা পাচ্ছেন মাত্র ২১ দশমিক ২ শতাংশ।
পার্বত্য চট্টগ্রামে যেখানে দারিদ্র্যের হার ৬৫ শতাংশ এবং আদিবাসী–অধ্যুষিত সমতল এলাকায় দারিদ্র্যের হার ৮০ শতাংশ, সেখানে জাতীয় দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীগুলো মূলত ‘প্রান্তিকের মধ্যেও প্রান্তিক’ জনগোষ্ঠী। চরম দারিদ্র্যের মুখে দাঁড়িয়েও যদি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা তাদের কাছে না পৌঁছায়, তবে তা কেবল প্রশাসনিক দুর্বলতা নয়; বরং তাদের প্রতি এটি স্পষ্ট বঞ্চনা ও অবহেলা।
আদিবাসী জনগোষ্ঠী কেবল সংখ্যায় ক্ষুদ্র নয়; তারা ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও জীবনযাত্রার কারণে বহুলাংশে অরক্ষিত। উন্নয়ন, সম-অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নিরাপত্তার মূল স্রোতের সঙ্গে তাদের অন্তর্ভুক্ত করতেই হবে। এ বৈষম্য দূর করতে হলে অবিলম্বে কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির উপকারভোগী নির্বাচনে সর্বস্তরে সুশাসন, স্বচ্ছতা ও কঠোর জবাবদিহি নিশ্চিত করতে হবে।
রাজনৈতিক প্রভাব ও স্বজনপ্রীতি বন্ধ করতে হবে। ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তাদের এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালাতে হবে। দারিদ্র্য ও বঞ্চনার হার বিবেচনায় ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির কোটা বাড়ানো এবং আবেদনপ্রক্রিয়াকে আরও সহজ ও হয়রানিমুক্ত করা জরুরি। অবিলম্বে পার্বত্য চট্টগ্রামের কৌশলগত পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন এবং সমতলের আদিবাসীদের জন্য ভূমি কমিশন গঠনসহ আগে করা অঙ্গীকারগুলো বাস্তবায়নের কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 30,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).