ভৌগোলিক ও অবকাঠামোগত কারণে পার্বত্য তিন জেলা এমনিতেই রাষ্ট্রীয় অনেক সুবিধা থেকে পিছিয়ে পড়া। এর মধ্যে খবরে এসেছে, রাঙামাটির সরকারি ও এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে মোট ১ হাজার ৭০০ শিক্ষকের পদের বিপরীতে ৬৫৭টি পদ দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে আছে। এর সরাসরি প্রভাব পড়ছে জেলাটির শিক্ষার্থীদের পড়ালেখার ওপর। যার প্রমাণ পাওয়া যায় এ বছর এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে। রাঙামাটিতে ২০২৪ সালে এসএসসিতে পাসের হার যেখানে ছিল ৭১ দশমিক ৮৮ শতাংশ, ২০২৫ সালে সেখানে পাসের হার ৫৫ দশমিক ৯৮ শতাংশে নেমে আসে।
শিক্ষকসংকটে জেলাটিতে মাধ্যমিক শিক্ষায় যে গভীর সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা আর কোনোভাবেই উপেক্ষা করার সুযোগ নেই। জেলার সরকারি ও এমপিওভুক্ত বিদ্যালয়গুলোতে মোট ১ হাজার ৭০০ শিক্ষকের পদের বিপরীতে ৬৫৭টি পদ দীর্ঘদিন শূন্য পড়ে থাকা কেবল প্রশাসনিক দুর্বলতারই নয়, শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি অবহেলারও প্রকট উদাহরণ। এর সরাসরি মূল্য দিতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। জেলাটির মাচ্ছ্যাপাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের মতো অনেক বিদ্যালয়ে অর্ধেকের কম শিক্ষক নিয়ে পাঠদান চালাতে হচ্ছে, যা পাঠদানের প্রক্রিয়ায় শিক্ষক ও শিক্ষার্থী—উভয়েরই ক্ষতি করছে।
পাহাড়ি অঞ্চলের বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদায়ন ও স্থায়িত্ব—দুটি সমস্যাই সমান গুরুত্বের দাবি রাখে। অনেক ক্ষেত্রেই সমতল এলাকার শিক্ষকেরা পাহাড়ি পরিবেশে থাকতে অনিচ্ছুক। ফলে ওখানে পদায়ন করা হলে দ্রুত বদলির তদবির বা পেশা ত্যাগের ঘটনাও ঘটে। ফলে শূন্য পদের সংখ্যা কমার বদলে আরও বাড়ছে। এ পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় বাসিন্দাদের যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগের উদ্যোগ জরুরি। এতে একদিকে শিক্ষকঘাটতি কমবে, অন্যদিকে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা নিজস্ব সংস্কৃতি ও ভাষাবোধসম্পন্ন শিক্ষকের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা পাবে।
সমাধানের জন্য প্রথমেই প্রয়োজন দ্রুত নিয়োগ। সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পিএসসি এবং এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে এনটিআরসিএর মাধ্যমে বিশেষ নিয়োগ কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। দীর্ঘদিন ধরে শূন্য থাকা ৫৫৪টি এমপিওভুক্ত পদের দ্রুত তালিকা তৈরি করে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নিয়োগ সম্পন্ন করা জরুরি।
পাশাপাশি পাহাড়ি অঞ্চলে কর্মরত শিক্ষকদের জন্য বিশেষ ভাতা, নিরাপদ আবাসন, নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট–সুবিধা নিশ্চিত করতে হবে, যাতে তাঁরা উৎসাহের সঙ্গে স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারেন।
পার্বত্য জেলাগুলোর জন্য শিক্ষার্থীদের আবাসনব্যবস্থার ঘাটতিও গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। দূরদূরান্ত থেকে এসে প্রতিদিন ক্লাস করা অনেকের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই প্রত্যন্ত এলাকার বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রাবাস নির্মাণ ও সংস্কার প্রকল্প দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে। একই সঙ্গে উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ের শূন্য পদ পূরণ করা জরুরি বলে মনে করি।
আমরা আশা করি, সরকার রাঙামাটির মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষক সংকটকে জরুরি সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করে দ্রুত ও টেকসই সমাধানের উদ্যোগ নেবে।
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).
This petiton does not yet have any updates
At 14,000 signatures, this petition becomes one of the top signed on amarabedon.com!
By signing you are agree to the followingTerms & Condition and Privacy Policy.
Reasons for signing.
See why other supporters are signing, why this petition is important to them, and share your reason for signing (this will mean a lot to the starter of the petition).